শিক্ষা মনোবিজ্ঞান হল শিক্ষার্থীর শিক্ষাকালীন আচরণের বিজ্ঞান। শিক্ষাক্ষেত্রে আচরণই হল গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান জানা আবশ্যিক। শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তাকে দুটি দিক থেকে আলোচনা করা যায়। তত্ত্বগত দিক, ব্যাবহারিক দিক।

শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা
শিশুর প্রকৃতি: শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষার্থীর বয়স, আগ্রহ, সামর্থ্য মনোভাব ইত্যাদি সম্বন্ধে জানা থাকলে তবেই শিশুকে শেখানো সম্ভব। আগ্রহ, মনোভাব, সম্ভাবনা ইত্যাদির বিষয়গুলি শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অন্তর্গত। তাই শিক্ষকের কর্তব্য হল শিশুর প্রকৃতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা। এপ্রসঙ্গে রুশোর বক্তব্য “A Child is a book which the teacher to learn from page to page.” এই বক্তব্যটি শিক্ষাক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
ব্যক্তির বিকাশ: শিশু জন্মের পর থেকে বিভিন্ন ধরনের বিকাশের মধ্য দিয়ে পরিণত ব্যক্তি হয়ে ওঠে এবং একটি নির্দিষ্ট বয়সে সে মারা যায়। প্রতিটি স্তরের জন্য বিকাশের বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে একজন শিক্ষককে জানতে হবে এবং স্তর অনুযায়ী শিশুর যথোপযুক্ত বিকাশের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সফলভাবে শিক্ষাদানের কাজ সম্ভব হবে না।
শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষা : আধুনিক শিক্ষা মনোবিজ্ঞানসম্মত শিক্ষায় শিশুকেন্দ্রিকতার উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে অর্থাৎ শিশু থাকবে শিক্ষার কেন্দ্রে। তাদের সক্রিয়তার উপর গুরুত্ব প্রদান করে শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করবেন ও নির্দেশনা দান করবেন।
শ্রেণিকক্ষের শিখন : শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষক শিক্ষাদান করেন ও শিক্ষার্থীর শিখন সম্পন্ন হয়। শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে শিখনের নীতি, তত্ত্ব, শিখন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা, শিখনের জন্য পাঠক্রম, শিখন পরিবেশ, শিখনে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ ইত্যাদি বিভিন্ন তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ রয়েছে, যেগুলি সম্পর্কে শিক্ষকের অবহিত হওয়া প্রয়োজন। যেমন শ্রেণিকক্ষে কীভাবে শিক্ষক বিষয় উপস্থাপন করবেন, শিখনকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য শিক্ষক কী পন্থা অবলম্বন করবেন ইত্যাদি সব কিছুর ক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সম্পর্কিত জ্ঞান কাজে লাগে।
ব্যক্তিগত পার্থক্য: যে কোনো দুজন ব্যক্তির মধ্যে কিছু না কিছু পার্থক্য থাকবেই। শিক্ষণ- শিখনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পার্থক্য বিচার করে শ্রেণি শিক্ষণ হওয়া উচিত, সেই সম্পর্কে মনোবিজ্ঞানের ধারণা না থাকলে শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়া যথাযথ হবে না। যেমন একটি শ্রেণিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অন্ধ শিক্ষার্থী রয়েছে। অন্ধ শিক্ষার্থীকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মত করে শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়া পরিচালিত করলে অসুবিধা সৃষ্টি হবে।
শিক্ষাদান পদ্ধতি: প্রাচীনকাল থেকেই শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাদান পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। আধুনিককালে সভ্যতা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি যেমন এগিয়েছে শিক্ষাদান পদ্ধতিরও পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে। বিভিন্ন নতুন নতুন পদ্ধতি যেমন প্রোজেক্ট, সমস্যাসমাধান, প্রোগ্রাম ভিত্তিক শিখন, কম্পিউটার ভিত্তিক শিখন ইত্যাদি আবিষ্কৃত হয়েছে এবং আরও নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করা হচ্ছে শিক্ষণ- শিখন প্রক্রিয়াকে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানসম্মত করার জন্য।
শিক্ষাদান প্রক্রিয়া পরিচালনা: শিক্ষাদান প্রক্রিয়াকে যথাযথভাবে পরিচালনা করার জন্য শিক্ষার্থীর বয়স অনুযায়ী আগ্রহ, মনোভাব, সম্ভাবনা, সৃজনশীলতা ইত্যাদি পরিমাপের মাধ্যমে শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়া পরিচালনা করার জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজন শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সংক্রান্ত জ্ঞান।
শিক্ষার্থীর সমস্যার সমাধান: শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে যা মূলত মানসিক। বিভিন্ন বয়সের সমস্যা বিভিন্ন হতে পারে। শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সমাধান করা যায়। বা ওই সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া যায় বা প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়। মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বিষয় জানতে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান শিক্ষককে সাহায্য করে।
বিদ্যালয় পরিবেশ: কী ধরনের বিদ্যালয় পরিবেশ শিশুর পঠন-পাঠনের উপযোগী এবং কোন্ পথে বিদ্যালয় পরিচালনা করলে শিশুর সঠিক পথে এগোতে পারবে তা জানতে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সম্বন্ধে জানতে হবে শিক্ষা প্রশাসকদের।
শিক্ষার্থীদের নির্দেশনাদান: শিক্ষা প্রক্রিয়াকে সফল করে তুলতে হলে প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষাগত ও বৃত্তিগত নির্দেশনা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, অপসংগতিমূলক আচরণ ইত্যাদি দেখা যায়। এই সব সমস্যা দূরীকরণের জন্য শিক্ষাগত নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সাহায্য করে।
সর্বাঙ্গীণ গুণের বিকাশ: প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থায় ধারণা ছিল শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জ্ঞানের বিকাশ সম্ভব। আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হল শিশুর সর্বাঙ্গীণ বিকাশসাধন। সুতরাং যেসব বিষয়গুলি সর্বাঙ্গীণ বিকাশে সাহায্য করে যেমন শিক্ষার্থীর অভ্যাস, অনুরাগ, সেন্টিমেন্ট, মনোভাব, ব্যক্তিসত্তা ইত্যাদি বিষয়ে শিখনের ফল হিসেবে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়।
মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জ্ঞান: শিক্ষণ শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েরই সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া প্রয়োজন। শিক্ষা মনোবিজ্ঞান আলোচনা করে মানসিক স্বাস্থ্য কী, মানসিক স্বাস্থ্য কী কী কারণে নষ্ট হতে পারে, মানসিক স্বাস্থ্যের উপর শিক্ষার কীরূপ প্রভাব রয়েছে, কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখা যায় ইত্যাদি। শিক্ষা মনোবিজ্ঞান শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়কেই মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করে।
শিক্ষার উদ্দেশ্য: যে কোনো প্রক্রিয়ার একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে। শিক্ষা একটি প্রক্রিয়া তাই শিক্ষারও একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে। শিক্ষার উদ্দেশ্যকে সফলরূপ দিতে হলে বয়সভিত্তিক চাহিদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কীভাবে শিক্ষা দেওয়া যায় তা জানা প্রয়োজন।
মনোভাব গঠন: শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় মনোযোগী করার জন্য শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বিষয়ের প্রতি যেমন আগ্রহ সৃষ্টি ও ধনাত্মক মনোভাব গঠন করা দরকার, তেমনই শিক্ষকের মধ্যে ওই পাঠ্য বিষয়টিকে। যাতে ভালোভাবে পদ্ধতিগত উপস্থাপন করতে পারে সে ব্যাপারে যথাযথ ধারণা থাকা প্রয়োজন। তাই শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে মনোযোগ, অনুরাগ, মনোভাব ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
গতিশীলতা: শিক্ষা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। শিক্ষাক্ষেত্রে গতিশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। গতিশীলতা বলতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিখনের ক্ষেত্রে যেমন গতিশীলতা প্রয়োজন ঠিক একইভাবে শিক্ষকদের শিক্ষণের ক্ষেত্রেও গতিশীলতা প্রয়োজন। গতিশীলতার ধারণা সৃষ্টিতে শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সাহায্য করে।
আচরণের পরিবর্তন: শিক্ষার্থীর আচরণের পরিবর্তনই হল শিখন। পরিবর্তনশীল উপযোগী আচরণ পরিবর্তন করতে হলে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের জ্ঞানের প্রয়োজন।
ব্যাবহারিকগত দিক থেকে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের গুরুত্ব :
শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের ব্যাবহারিক দিক থেকে গুরুত্বগুলি হল-
শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ব্যবহার: শ্রেণি শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য শিক্ষক বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করেন। কোনো বিষয় কোন্ পদ্ধতিতে পড়ানোর জন্য কী ধরনের শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করা উচিত তা জানার জন্য দরকার শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান।
আচরণগত সমস্যা: শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের একটি শাখায় রয়েছে অপসংগতিমূলক আচরণ কী, শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে অপসংগতিমূলক আচরণ দূরীকরণে কী কী উপায় গ্রহণ করা উচিত ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা মনোবিদ্যায় বিভিন্ন ধরনের কৌশল ও পদ্ধতি রয়েছে। সেই কৌশল ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের অপসংগতিমূলক আচরণ দূর করা যায় এবং এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উপদেশ দেওয়া যায়। সুতরাং অপসংগতিমূলক আচরণগত সমস্যা দূরীকরণে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানকে ব্যবহার করা যায়।
শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা: বর্তমানে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো না কোনো বিষয়ে শৃঙ্খলাঘটিত সমস্যা লেগেই থাকে। আধুনিক শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে বলা হয়েছে কঠোর শৃঙ্খলা দ্বারা শৃঙ্খলাঘটিত সমস্যা সমাধান করা যায় না। যদি স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খলার মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন তবে শৃঙ্খলার সমস্যা কিছুটা সমাধান করা যায়। স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খলা স্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী সংসদ, অভিভাবক-শিক্ষক সমিতি ইত্যাদি গঠনের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। আবার বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন শৃঙ্খলাঘটিত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, যার মাধ্যমে প্রশাসনকে গণতান্ত্রিক করা সম্ভব। এগুলি শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে আলোচিত হয়। শিক্ষামনোবিজ্ঞানের নীতি, কৌশল, পদ্ধতি ব্যবহার করে বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা স্থাপনের ব্যবস্থা করা দরকার।
সময়তালিকা গঠন: বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে সময়তালিকা গুরুত্বপূর্ণ। সময়তালিকা তৈরির নির্দিষ্ট নিয়ম ও রীতি রয়েছে। কীভাবে সময়তালিকা তৈরি করলে শিক্ষার্থীর শিখন ও শিক্ষকের পাঠদানে অবসাদ আসবে না সেই দিকে লক্ষ রাখা দরকার। কোন্ সময় টিফিন দেওয়া দরকার, সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির ব্যবস্থা রাখা দরকার ইত্যাদি সম্বন্ধে সঠিক ধারণা জন্মানোর জন্য প্রয়োজন শিক্ষা মনোবিজ্ঞানমূলক জ্ঞান। তাই সময়তালিকাকে বিজ্ঞানসম্মত করার জন্য শিক্ষামনোবিজ্ঞান ব্যবহার করা হয়।
মূল্যায়ন: মূল্যায়ন ব্যবস্থায় পরীক্ষাকেন্দ্রিকতা দূরীকরণ প্রয়োজন। প্রশ্ন তৈরির ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানসম্মত বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, নম্বর দানের পরিবর্তে গ্রেডেশন ব্যবস্থা, বৌদ্ধিক বিকাশ ছাড়াও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অন্যান্য গুণাবলির বিকাশের উপর গুরুত্ব প্রদান, বিভিন্ন ধরনের ব্যাবহারিক পরীক্ষা, প্রোজেক্ট ইত্যাদি যথাযথ দান করলে শিক্ষা প্রক্রিয়ায় সফলতা আসবে। মনোবিজ্ঞানসম্মত মূল্যায়ন পদ্ধতি শিক্ষাক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের কৌশল ও পদ্ধতিগুলি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বর্তমান মূল্যায়ন ব্যবস্থায়।
পাঠক্রম রচনা: শিক্ষার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পাঠক্রম। পাঠক্রম স্তরভেদে বিভিন্ন হয়। প্রতিটি স্তরের পাঠক্রম তৈরির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বয়স, শিক্ষার্থীর চাহিদা, সামাজিক চাহিদার ও জাতীয় চাহিদার উপর গুরুত্ব প্রদানের প্রয়োজন। এর জন্য পাঠক্রম প্রণেতাদের প্রয়োজন শিক্ষা মনোবিজ্ঞানসম্মত জ্ঞান। সুতরাং পাঠক্রম রচনায় শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের ব্যাবহারিক প্রয়োগ রয়েছে।
পাঠ্যপুস্তক রচনা: প্রতিটি স্তরের পাঠক্রমের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় পাঠ্যপুস্তক। পাঠক্রমে যেমন শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের প্রয়োগের প্রয়োজন তেমনই পাঠ্যপুস্তক প্রণেতাদের শিক্ষা মনোবিজ্ঞানসম্মত জ্ঞান প্রয়োজন।
গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষককেন্দ্রিকতার পরিবর্তে শিশুকেন্দ্রিকতার উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এই কথা চিন্তা করে পেস্তালৎসি বলেছিলেন, “I wish to Psychologize education.” আবার রুশো বলেছিলেন “A Child is a book which the teacher is to learn from page to page.” উপরের দুটি উক্তিতে শিক্ষায় শিশুকেন্দ্রিকতার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই শিক্ষাকে শিশুকেন্দ্রিক করতে হলে সেই অনুযায়ী শিক্ষার লক্ষ্য, পাঠক্রম, শিক্ষার পরিবেশ, প্রশাসন, পাঠ্যপুস্তক, বিদ্যালয় পরিচালনা ইত্যাদি সব কিছুই স্থিরীকৃত হওয়া দরকার। শিক্ষা মনোবিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে, তবেই সুষ্ঠু শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব।
আরও পড়ুন | Link |
বিতর্কমূলক প্রবন্ধ রচনা পর্ব ১ | Click Here |
বিতর্কমূলক প্রবন্ধ রচনা পর্ব ২ | Click Here |
বৃদ্ধি ও বিকাশের অর্থ প্রশ্ন উত্তর | Click Here |
Good
Thank You.