আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস 12 চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা

Table of Contents

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস 12 চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা | Ajob Shohor Kolkata Question Answer

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর
আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর

১। “তাই আন্দাজ করলুম …”-বক্তা কী আন্দাজ করলেন? বক্তার এমন আন্দাজ করার কারণ কী? ২+৩

অথবা, আলোচ্য প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক ‘হাতীর দাঁত’-এর প্রসঙ্গ এনেছেন কেন? ৫

অথবা, “চিবোবার জন্য দাঁত রয়েছে লুকোনো”-প্রসঙ্গ কী? লুকোনো দাঁতের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য লেখো। ২+৩

বক্তা যা আন্দাজ করলেন: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী আন্দাজ করেছেন, ফরাসি বইয়ের দোকানের বাইরে বড়ো বড়ো হরফে ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ লেখা থাকতেই পারে, কিন্তু ভিতরে গেলে হয়তো অন্য পণ্য মিলবে। দোকানের ভিতরে হয়তো আছে ‘খুশবাই’, ‘সাঁঝের পীর’, ‘লোধরেণু’ বা ‘ওষ্ঠরাগ’-এর মতো সাময়িক আনন্দদায়ী নিম্নরুচির কিছু বই-যা বোধদীপ্ত নয়, যা লঘু সাহিত্য।

আন্দাজ করার কারণ: আলী সাহেব একদিন হঠাৎ কলকাতা শহরে ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ দেখে আশ্চর্য হয়ে ভেবেছিলেন, কোনো ফরাসি ব্যক্তি হয়তো পথ হারিয়ে এখানে এসেছে এবং ট্যাকের পয়সা খরচের জন্য শখ করে ফরাসি বইয়ের দোকান দিয়েছে। প্রাবন্ধিকের এমন মনে হয়, কারণ কলকাতার বাঙালি প্রকাশকদেরও শুধু ভালো বই বিক্রি করে মুনাফা অর্জন হয় না, তার সঙ্গে লঘুরসের চটুল উপন্যাসও গাদা গাদা ছাড়তে হয়। তাই সেই কলকাতাতে কেবল ফরাসি বই বিক্রি করে লাভবান হওয়া কঠিন। এই কথা বলতে গিয়ে প্রাবন্ধিক ‘হাতীর দাঁতের’ প্রসঙ্গ এনেছেন। হাতির বাইরের দাঁত কেবল শোভাবর্ধনের জন্য, খাদ্য চিবোনোর জন্য নয়। ঠিক তেমনই বাইরে ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ লেখা থাকলেও দোকানের ভিতরে হয়তো থাকবে ‘খুশবাই’, ‘সাঁঝের পীর’, ‘লোধরেণু’, ‘ওষ্ঠরাগ’ জাতীয় চটুল বই-যা বিক্রি করে সম্ভবত মুনাফালাভ হতে পারে। এই প্রসঙ্গেই প্রাবন্ধিকের এই উক্তি।

২। “সেই ভরসায় ঢুকলুম”-প্রাবন্ধিক কী মনে করে কোথায় ঢুকেছিলেন এবং ভরসার কারণ কী? ৫

যা মনে করে যেখানে ঢুকলেন: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে দেখা যায়, প্রাবন্ধিক কোনো এক বৃষ্টির দিনে বাড়ি ফেরার চিন্তায় বিচলিত হয়ে কলকাতায় একটি ফরাসি বইয়ের দোকান দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে যান। দোকানের সামনে বড়ো বড়ো হরফে লেখা ছিল ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’। কলকাতায় ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে লেখকের প্রথমেই মনে হয়েছিল, কোনো ধনী ফরাসি বোধহয় পথ হারিয়ে এখানে চলে এসেছে এবং শখ করে অর্থের স্বেচ্ছা অপচয় করতেই দোকান খুলে বসেছে। তাই তাঁর মনে ভাবনা জাগে এই দোকান নিতান্তই লোকদেখানো। তখনই তিনি একে হাতির দাঁতের সঙ্গে তুলনা করেন। হাতির বাইরের দুটো বড়ো দাঁত তার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য, সাধারণত তা কোনো কাজে লাগে না। খাবার চিবিয়ে খাওয়ার জন্য হাতির মুখের ভিতর অন্য দাঁতও থাকে। ফরাসি বইয়ের দোকানটিও তেমনই লোকদেখানো বিপণি। বাইরে ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ লেখা থাকলেও আসলে সেখানে কিছু চটুল বই ছাড়া আর কিছুই নেই। ট্যাকের পয়সা খোয়ানোর জন্যই বেচারা ফরাসি দোকানদার এই পুস্তক বিপণি খুলেছেন।

ভরসা পাওয়ার কারণ: পাঠ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধ অনুসারে ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এর সামনে দাঁড়িয়ে সৈয়দ মুজতবা আলীর মনে হয়েছে, এই দোকানটি শুধুমাত্র নামেই ফরাসি। ভিতরে ‘খুশবাই’, ‘সাঁঝের পীর’, ‘ওষ্ঠরাগ’ বা ‘লোধরেণু’ ইত্যাদির মতো তরল লঘু রসাত্মক বই পাওয়া যায়। তাই দোকানে ঢুকলেও তাঁকে পয়সা খরচ করে কোনো বই কিনতে হবে না।

কলকাতায় বাংলা বই-ই বিক্রি হয় না, বাঙালি প্রকাশকদেরও লক্ষ্মী লাভের জন্য নিম্নরুচির বই ছাপাতে হয়। তাই, এই ফরাসি বইয়ের দোকানেও আদতে সেই বই মিলবে বলেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন প্রাবন্ধিক। বই বিক্রির আকালই প্রাবন্ধিকের এই ভরসার কারণ।

৩। আজব শহর কলকেতাই বটে-প্রাবন্ধিকের, কলকাতাকে আজব মনে হওয়ার কারণ কী? ৫

অথবা, “শুধু ফরাসী বই বেচেই লোকটা পয়সা কামাতে চায়- লোকটা কে এবং বক্তার এমন মনে হওয়ার কারণ কী? ৫

লোকটির পরিচয়: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় উদ্দিষ্ট ‘লোকটা’ কলকাতায় অবস্থিত ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’- এর মালিক।

মনে হওয়ার কারণ: কলকাতা শহর ভ্রমণে বেরিয়ে প্রাবন্ধিক এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়ে যখন পথ হারানোর মতো বেদনায় কাতর তখন তাঁর চোখে পড়ে একটি ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’। যে শহরে বাংলা বইয়েরই ক্রেতা দুর্লভ সেখানে ফরাসি বইয়ের দোকান শহরের আজব ভাব খানিকেই তুলে ধরে। নিশ্চিতভাবেই ধনী ব্যক্তির শখ করে অর্থের অপচয় এবং ফরাসি বইয়ের নামে চটুল বই বিক্রির অভিপ্রায়-দোকানটি সম্পর্কে এইসব চিন্তা মাথায় নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। আরও একবার হতবাক হন প্রাবন্ধিক। দেখেন, সেখানে হলদে ও সাদা মলাট দেওয়া ফরাসি ভাষায় লেখা প্রচুর বই রাখা আছে, যা আরও বেশি অভিনব। বইগুলির মধ্যে কিছু সাজানো-গোছানো আছে এবং অবশিষ্ট বই যেখানে-সেখানে ছড়ানো অবস্থায় আছে। যে বইগুলি সাজানো আছে সেগুলি টাইপরাইটারের হরফ সাজানোর মতো করে বিন্যস্ত রয়েছে। যে বই সাজানোর পদ্ধতিটি জানে তার পক্ষে বই খুঁজে বের করা খুবই সহজ, আর যে এই পদ্ধতিটা জানে না তার পক্ষে খুবই অসুবিধার। বাঙালি দোকানদারেরা এভাবেই বইগুলি সাজিয়ে রাখেন। এই বিপুলসংখ্যক ফরাসি বই ও সেগুলিকে সাজানোর রীতি দেখে কথকের মনে হয়েছে, এভাবেই পুস্তকপ্রেমীদের আকর্ষণ করে শুধু ফরাসি বই-ই বেচতে চায় দোকানদার। বাংলা মুলুকের খাস কলকাতায় বসে কেবল ফরাসি বই বিক্রির অদ্ভুত ভাবনার জন্যই প্রাবন্ধিকের, কলকাতা শহরকে আজব বলে মনে হয়েছে।

৪। যে জানে না তার কোমর ভেঙে তিন টুকরো হয়ে যাবে-কার, কী না জানার কথা বলা হয়েছে? কোমর ভাঙার সম্ভাবনা আছে কেন? ২+৩

আকার: ভ্রমণপিপাসু সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় প্রাবন্ধিক বলছেন, ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এর সাজানো পুস্তকরাজির ‘সিজিল’ বা বিন্যাসরীতি না জানা থাকলে সেই অজ্ঞ ক্রেতার পছন্দের বই খুঁজতে গিয়ে তার কোমর ভাঙার সম্ভাবনা আছে কী: আলোচ্য অংশে এখানে ফ্রেঞ্চ বুক শপের বই সাজানোর কায়দা বা সিজিলটা জানার কথা বলা হয়েছে। সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে ক্রেতা তার প্রয়োজনীয় বই খুঁজে পাবেন না এবং তাকে অসুবিধায় পড়তে হবে বলে প্রাবন্ধিক জানিয়েছেন।

কোমর ভাঙা: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী একদিন কলকাতা শহরের এক ফরাসি বইয়ের দোকানে দেখেন, ফরাসি দোকানদার কলকাতায় বইয়ের ব্যাবসা করতে এসে কার্যত বাঙালি হয়ে গিয়েছেন। বাঙালি দোকানদারের মতো করেই বইগুলি সাজিয়েছেন টাইপরাইটারের ঢঙে। যার সিজিলটা জানা আছে সে অনায়াসেই চোখ বন্ধ করে ইচ্ছামতো বই খুঁজতে পারবে। যার জানা নেই তার নির্দিষ্ট বই খুঁজতে কোমর ভেঙে তিন টুকরো হয়ে যাবে, অর্থাৎ তাকে খুব অসুবিধায় পড়তে হবে বলেই প্রাবন্ধিকের অভিমত।

৫। “ইতিমধ্যে ফরাসী হাসি হেসে দাঁড়িয়েছেন”-কে ফরাসি হাসি হেসে বক্তাকে কী বললেন? আলোচ্য ব্যক্তির পরিচয় দাও। ২+৩

ভয় যে: আলোচ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে ফ্রেঞ্চ বুক শপের দোকানদার ফরাসি মেমসাহেব, প্রাবন্ধিককে দেখে ফরাসি হাসি হেসে দাঁড়িয়েছিলেন।

যা বললেন: কৌতূহলবশত ফরাসি বইয়ের দোকানে আলী সাহেব ঢুকতেই হাসিমুখে এসে দাঁড়ালেন এক ফরাসি মেমসাহেব। আলী সাহেব পরশুরামের কেদার চাটুজ্যের ভাষায় মেমসাহেবকে সেলাম জানাতে, প্রত্যুত্তরে মেমসাহেব ফরাসি ভাষায় বলেছিলেন- “আপনার আনন্দ কিসে’ অর্থাৎ ‘কি চাই?”

পরিচয়: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে আমরা জানতে পারি, কলকাতার ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এ প্রাবন্ধিক আলী সাহেব এক ফরাসি মেমসাহেবের সম্মুখীন হন। মেমসাহেব কলকাতায় এসেছেন মাস তিনেক আগে। এই বইয়ের দোকান তাঁর নিজের নয়, তাঁর বান্ধবীর। মেমসাহেব মোটামুটি কাজ চালানো গোছের ইংরেজি জানেন। বান্ধবীর অনুপস্থিতিতে শুদ্ধমাত্র ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রচার কামনায় তিনি এই দোকানে বসেছেন। কথাবার্তায় সরল সাধাসিধে। দূর প্রবাসে এসে প্রাবন্ধিকের সঙ্গে মাতৃভাষায় কথা বলতে পারার আনন্দ তাঁর দেশ ও ভাষার প্রতি ভালোবাসাকে প্রকাশ করে।

৬। “পরশুরামের কেদার চাটুজ্যেকে আমি মুরুব্বি মানি”-কেদার চাটুজ্যের পরিচয় দাও। তাকে ‘মুরুব্বি’ মানার কারণ কী? ২+৩

কেদার চাটুজ্যে: পরশুরাম ওরফে রাজশেখর বসুর একটি উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় চরিত্র হল কেদার চাটুজ্যে। বৈঠকি আড্ডার আবহে অজান্তে পাঠকেরাও ঢুকে পড়েছেন কেদার চাটুজ্যের সঙ্গে, তামাক খেয়েছেন এক হুঁকোতে। কেদার চাটুজ্যে বারবার এসেছেন পরশুরামের গল্পে। তাঁর সংলাপ কিছুটা উদ্ভট হলেও তা বেমানান নয়। তিনি কখনও শুনিয়েছেন বাঘের গল্প কখনও-বা প্রেমের গল্প কখনও মেমসাহেবের গল্প।

মুরুব্বি মানার কারণ: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় আমরা দেখি ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এ কথকের সামনে এক ফুটফুটে মেমসাহেব আবির্ভূত হন। মিষ্ট ফরাসি হাসির মাধ্যমে কথককে তিনি উন্ন অভ্যর্থনা জানান ও আলাপ করেন। পরশুরাম সৃষ্ট চরিত্র কেদার চাটুজ্যে মহিলাদের সঙ্গে মসৃণ আলাপে দক্ষ ছিলেন। তাঁকে ‘মুরুব্বি’ অর্থাৎ অভিভাবক হিসেবে স্মরণ করে প্রাবন্ধিক ফরাসি মেমসাহেবকে ‘সেলাম’ জানান। নারী মনস্তত্ব সম্পর্কে অভিজ্ঞ কেদার চাটুজ্যেকে অনুসরণ করে মেমসাহেবকে অভিবাদন জানিয়েছেন কথক এবং তাঁকে ‘মুরুব্বি’ হিসেবে মেনেছেন।

৭। “সে কথাই স্মরণ নেই-গোটা ভাষাটার কথা বাদ দিন”-কোন্ কথা স্মরণে নেই? কী কারণে গোটা ভাষাটা বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে? ২+৩

যে কথা স্মরণে নেই: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত পাঠ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে আমরা দেখি, শহর কলকাতায় ঘুরতে ঘুরতে প্রবল বৃষ্টি নামলে প্রাবন্ধিক তাঁর সামনে দেখতে পান একটি ফ্রেঞ্চ বুক শপ। দোকানে ঢোকার পর এক মেমসাহেব তাঁকে ফরাসি ভাষায় অভিবাদন জানিয়ে জিজ্ঞেস করেন, প্রাবন্ধিক কী কিনতে চান। এরপর ফরাসি ভাষায় কিছু টুকরো কথোপকথন চলে মেমসাহেব ও প্রাবন্ধিকের মধ্যে।

সৈয়দ মুজতবা আলী ছিলেন বহুভাষাবিদ। তিনি ফরাসি ভাষা বলেছেন সেই প্রথম যৌবনে প্রায় দশ বছর পূর্বে। তাই তাঁর ভাষা ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এই কারণে মেমসাহেবের কথার প্রসঙ্গে তিনি প্রাথমিকভাবে নীরব থাকেন। যৌবনে বলা ভাষা প্রৌঢ় বয়সে আর তাঁর স্মরণে নেই।

ভাষাটি বাদ দেওয়ার কারণ: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘পঞ্চতন্ত্র’ গ্রন্থ থেকে গৃহীত ‘আজব শহর কলকেতা’ নামাঙ্কিত রচনায় প্রাবন্ধিক ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এ প্রবেশের পর ফুটফুটে এক মেমসাহেব তাঁকে ফরাসি হাসির মাধ্যমে স্বাগত জানিয়েছেন। মেমসাহেবকে সেলাম জানানোর পর তিনি ফরাসিতে প্রাবন্ধিককে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘আপনার আনন্দ কিসে?’ অর্থাৎ ‘কি চাই?’ ফরাসি ভাষার বইয়ের দোকানে ঢুকে ফরাসি মেমসাহেবের মুখে ফরাসি ভাষায় প্রশ্ন শুনে চরম অস্বস্তিতে পড়েন প্রাবন্ধিক। প্রৌঢ়ত্বে উপনীত প্রাবন্ধিক প্রথম যৌবনে ফরাসি ভাষায় কথা বললেও অনভ্যাসের কারণে তা এখন বিস্মৃতপ্রায়। প্রাবন্ধিকের পক্ষে ফরাসি ভাষায় সাবলীলতার সঙ্গে কথা বলার তো প্রশ্নই নেই, কাজ চালানো ফরাসি ভাষা বলাও যে দুর্বৃহ-সে কথাই ব্যক্ত হয়েছে ‘বাদ দিন’ কথাটির মাধ্যমে।

৮। “জর্মন ভাষায় একটি প্রেমের গান আছে”-অর্থ-সহ গানটি উল্লেখ করো। আলোচ্য প্রবন্ধে গানটি উল্লেখের তাৎপর্য আলোচনা করো। ২+৩

উল্লিখিত প্রেমের গান: ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর উল্লিখিত জার্মান ভাষায় গাওয়া প্রেমের গানটি হল: Dein Mund sagt “Nein” Aber Deine Augen Sagen “Ja”

জার্মান গানের অর্থ: গানটির রচয়িতা উইলি রোজেন। গানটির অর্থ হল-তোমার মুখ বলছে ‘না, না’, কিন্তু তোমার চোখ দুটি বলছে ‘হাঁ হাঁ’।

তাৎপর্য: জার্মান ভাষায় রচিত মূল গানটি হল Dein Mund sagen “Nein”, Aber Deine Augen sagen “Ja”. গানটির রচয়িতা জার্মান গীতিকার উইলি রোজেন (Willy Rosen)। ১৯৩০ সালে রচিত ও গীত এই গানটির ইংরেজি ভাষান্তর হল, “Your eyes say no-no…but your mouth says yes-yes”. কাহিনিকার ভাষান্তর করে বলেছেন, “তোমার মুখ বলছে ‘না,নো’, কিন্তু তোমার চোখ দু’টি বলছে ‘হাঁ হাঁ।” ফ্রান্স ও জার্মানি শত্রুভাবাপন্ন হওয়ায় তারা একে অপরের বিপরীতধর্মী কাজ করে থাকে। মেমসাহেব কথকের ইংরেজি বুঝতে না পেরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করলেন। মুখে বললেন ইয়েস, ইয়েস কিন্তু চোখের ভাষায় কথক স্পষ্টত বুঝলেন ‘না, নো’। অর্থাৎ প্রাবন্ধিকের কথার এক বর্ণও ফরাসি মেমসাহেব বুঝতে পারেননি।

৯। “মহা মুশকিল।”-কে, কোথায় মহা মুশকিলে পড়েছিলেন? হঠাৎ মুশকিলে পড়ে, তা থেকে তিনি কীভাবে উদ্ধার পেয়েছিলেন সে প্রসঙ্গ সংক্ষেপে আলোচনা করো। ২+৩

যিনি, যেখানে: পাঠ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে আমরা দেখি প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী মহা মুশকিলে পড়েছিলেন। প্রাবন্ধিক একদিন শহর কলকাতা ঘুরে দেখতে বেরিয়ে একটি ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এ যান। দোকানের ফরাসি মেমসাহেব বাংলা বা ইংরেজি ভাষা জানেন না। তাই প্রাবন্ধিক মেমসাহেবের সঙ্গে ভাঙা ভাঙা ফরাসি ভাষায় কথোপকথন চালাতে গিয়ে মহা মুশকিলে পড়েছিলেন।

মুশকিল ও তা থেকে উদ্ধার: প্রাবন্ধিক তাঁর প্রথম যৌবনে প্রথম রপ্ত করা ফরাসি ভাষাটি ভালোভাবে বলতে পারলেও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সেই অভ্যাসে মরচে ধরেছে। তাই ফরাসি পড়ে বুঝতে পারলেও, তা সাবলীলভাবে বলতে পারেন না। কিন্তু মেমসাহেবের সঙ্গে বাক্যালাপের সময় তিনি সামান্য কিছু কথা বলেন ফরাসিতে। মেমসাহেবও তখন খুশি হয়ে তাঁকে ফরাসিতেই কথোপকথন চালাতে বলেন। প্রাবন্ধিক এতে মনে সাহস পেয়ে কোনোক্রমে ভাঙা ভাঙা ফরাসি বলে বাঙালি জাতির মান রেখেছিলেন। এভাবে মেমসাহেবের উৎসাহ প্রদানই প্রাবন্ধিকের মুশকিল আসান হয়ে ওঠে।

১০। মেমসাহেব আদেশ দিলেন,”-মেমসাহেব কাকে কী আদেশ দিলেন? এই আদেশ দেওয়ার ফলে কী হয়েছিল? ২+৩

যাকে যা আদেশ দিলেন: ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে মেমসাহেব প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীকে আদেশ দিয়েছিলেন।

মেমসাহেব প্রাবন্ধিককে ‘মসিয়ো’ অর্থাৎ ‘মশাই’ বলে সম্বোধন করে আদেশ দিলেন, তিনি যেন ফরাসি ভাষাতেই কথা বলেন। কারণ মেমসাহেব ইংরেজি বুঝতে পারেন না। এরপর ‘মাসিয়ো ফ্রাঁসোয়া পঁসে’ নামক এক ফরাসি রাজদূতের নাম উচ্চারণ করতে গিয়ে কথক ফরাসি বলে ফেললেই মেমসাহেব এই আদেশ করেন।

আদেশ দেওয়ার ফলে যা হল: ফ্রেঞ্চ বুক শপ-এর বই বিক্রেতা ফরাসি মেমসাহেবের সঙ্গে কথোপকথনের সময় আলী সাহেব ইংরজিতে বলতে বলতে হঠাৎ ফরাসি রাজদূত ফ্রাঁসোয়া পঁসে’র নাম উচ্চারণ করতে গিয়ে। কিছুটা ফরাসি বলে ফেলেন। মুজতবা আলী অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছুটা ফরাসি বলে ফেলাতেই মেমসাহেব তাঁকে বাকি কথা ফরাসিতে বলারই আদেশ দেন। প্রাবন্ধিক আলী সাহেব ফরাসি ভাষা শিখেছিলেন যৌবনে। এখন ‘কেঁদেকুকিয়ে’ পড়তে পারেন, কিন্তু বলতে গেলে তাঁর শোচনীয় অবস্থা হয়। তবুও তিনি হাল ছাড়েন না। তাঁর কথায় ফরাসি “ব্যাকরণকে গঙ্গা যাত্রায় বসিয়ে উচ্চারণের মাথায় ঘোল ঢেলে চালালুম আমার ধেনো মার্কা ফরাসি শ্যাম্পেন।” এরকম ‘টুটিফুটি’ ফরাসি ভাষা বলাতেও মেমসাহেব আনন্দে আত্মহারা। অর্থাৎ প্রাবন্ধিকের ব্যাকরণহীন ভাঙা ভাঙা ফরাসি শুনেও মেমসাহেব খুশি হয়েছিলেন।

১১। “বাঙালির জাত্যভিমানে বড্ডই আঘাত লাগলো”-আঘাতের স্বরূপ ও তা নিরসনে কথকের প্রচেষ্টার পরিচয় দাও। ৫

জাত্যভিমানে আঘাতের স্বরূপ: পাঠ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে স্বয়ং প্রাবন্ধিকের তথা মুজতবা আলীর জাত্যভিমানে আঘাত লাগার কথা বলা হয়েছে। ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এ যে মেমসাহেব ছিলেন তিনি ইংরেজি বুঝতে পারছিলেন না। এর ফলে প্রাবন্ধিকের সঙ্গে ভাবের আদানপ্রদানের এক দুরত্ব তৈরি হয়েছিল ভাষার জন্য। এরপর ফরাসি রাজদূতের কথাপ্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক ফরাসি ভাষা বলে ফেললেও তিনি কিন্তু ফরাসি ভাষায় স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন না। মেমসাহেব যখন ফরাসি ভাষায় কথা বলতে বললেন তখন বাঙালি হিসেবে প্রাবন্ধিকের জাত্যভিমানে আঘাত লাগল। কারণ বাঙালিরা কোনো কিছুতেই সহজে পিছপা হয় না।

নিরসনের প্রচেষ্টা: প্রাবন্ধিক ফরাসি ভাষা খুব কষ্টে পড়তে পারলেও, তা বলতে গেলে যে তাঁর নির্বোধের মতো অবস্থা হবে তা স্বীকার করাটাই বাঙালির জাত্যভিমানে প্রচণ্ড আঘাত হানে। তাই এই অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য দুর্গতিনাশিনী দশভুজার শরণাপন্ন হন প্রাবন্ধিক। কলকাতায় বসে ফরাসি ললনা বাংলা বা ইংরেজি না বলতে পারলে, একইভাবে সুদূর ফ্রান্স থেকে এতদূরে অবস্থান করে ত্রুটিপূর্ণ ফরাসি বলাও অপরাধ নয় বলে নিজেকে আশ্বাস দেন তিনি।

১২। “আমার অবস্থা ডডনং হয়ে দাঁড়ায়। ভাবলুম, দুঙ্গা বলে ঝুলে পড়ি।”-প্রাবন্ধিকের অবস্থা ‘ডডনং’ হওয়ার কারণ কী? তিনি ‘দুর্গা’ বলে ঝুলে পড়েছিলেন কেন? ২+৩

এমন হওয়ার কারণ: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত পাঠ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে আমরা এই ‘ডডনং’ শব্দবন্ধটি পাই। ‘ডডনং’ শব্দটির কোনো আক্ষরিক অর্থ আমরা জানতে পারি না। তবে লোকশ্রুতি আছে ‘৬৬নং (ছেষট্টি) কলিকাতা’- এই ঠিকানাকে কেউ মূর্খতার দরুন ‘ডডনং কলিকাতা’ পড়ে ফেলেছিল। তাই এই প্রবন্ধে মূর্খের মতো বোঝাতে ‘ডডনং’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। সৈয়দ মুজতবা আলী ফরাসি ভাষাটা অনেক কষ্ট করে কেঁদে কঁকিয়ে পড়তে পারলেও, সেই ভাষায় কথা বলতে গেলে তাঁর অবস্থা হয় শোচনীয়। মেমসাহেবের সাবলীল ফরাসির কাছে তাই তাঁর অবস্থা ডডনং-ই হয়েছে।

প্রাবন্ধিকের এমন ভাবনার কারণ: আলোচ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধে আমরা দেখি, মেমসাহেবের আদেশপালনে ফরাসি ভাষায় কথা বলতে গিয়ে নির্বোধের মতো অবস্থা হল প্রাবন্ধিকের। তিনি ফরাসি ভাষাটি কোনোরকমে করে পড়তে পারলেও এই ভাষায় কথা বলা প্রায় অসাধ্য ছিল প্রাবন্ধিকের পক্ষে। তাই তিনি ভাবলেন, মেমসাহেব যদি কলকাতায় বইয়ের দোকান করে বাংলা বা ইংরেজি বলতে না পারেন তাহলে ফ্রান্স থেকে হাজার মাইল দূরে দাঁড়িয়ে নির্ভুল ফরাসি বলতে না পারার জন্য তাঁর লজ্জা পাওয়া উচিত নয়। তাই তিনি মা দুর্গাকে স্মরণ করে ফরাসিতে মেমসাহেবের সঙ্গে কথোপকথন শুরু করেন।

১৩। “এমন কোন্ বাইবেল অশূদ্ধ হয়ে যাবে ?”-‘বাইবেল’ কী? তা অশুদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে কেন? ২+৩

‘বাইবেল শব্দের অর্থ: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত পাঠ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধতে আমরা ‘বাইবেল’ শব্দটির উল্লেখ পাই। বাইবেল হল খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। এর দুটি খণ্ড-ওল্ড টেস্টামেন্ট ও নিউ টেস্টামেন্ট। ওল্ড টেস্টামেন্টে সৃষ্টির আদি থেকে জিশুখ্রিস্টের জন্ম পর্যন্ত ঘটনাধারা হিব্রু ভাষায় বিবৃত। নিউ টেস্টামেন্টের ভাষা গ্রিক। এখানে খ্রিস্টের বাণী ও তাঁর শিষ্যদের বার্তা লিপিবদ্ধ হয়েছে।

বাইবেল অশুদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গ: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর বক্তব্য অনুসারে ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এ যে মেমসাহেব ছিলেন, তিনি কলকাতায় অবস্থান করেও বাংলা ও ইংরেজি বলতে পারছেন না। বাংলায় বসে মেমসাহেব বাংলা কিংবা ইংরেজি কিছুই না বলতে পারলে কথকও অসংকোচে ত্রুটিপূর্ণ ফরাসি বলতেই পারেন। তা ফ্রান্স থেকে বহুদূরে কলকাতায় অবস্থানকারী কথকের নিশ্চয়ই কোনো অপরাধ নয়। তাই তাঁর মনে হয়নি এতে বাইবেল অশুদ্ধ হওয়ার মতো কোনো বিশাল দোষ হয়েছে।

১৪। “বরজলালের মত ইমনকল্যাণের সুর ধরলুম … মেমসাহেবও বুড়ো রাজা প্রতাপ রায়ের মত।”-বরজলাল সম্পর্কিত কাহিনিটি আলোচনা করো। মেমসাহেবের আচরণের সঙ্গে প্রতাপ রায়ের আচরণের তুলনা করা হয়েছে কেন? ২+৩

বরজলাল সম্পর্কিত কাহিনি: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত পাঠ্য ‘আজব শহর কলকেতা’ প্রবন্ধের কাহিনি প্রসঙ্গে সৈয়দ মুজতবা আলী – বরজলাল এবং ইমনকল্যাণের কথা বলেছেন। এই প্রসঙ্গটি রবীন্দ্রনাথ – ঠাকুরের ‘গানভঙ্গ’ কবিতা থেকে নেওয়া।

রবীন্দ্রনাথের ‘কথা ও কাহিনী’ কাব্যের অন্তর্গত ‘গানভঙ্গ’ কবিতাটিতে আমরা দেখি রাজা প্রতাপ রায়ের রাজসভায় কাশীনাথ নামে নতুন গায়কের আগমন হয়। তাঁর গায়নপদ্ধতি সম্পূর্ণ নতুন। সংগীতের নানা সূক্ষ্ম ক্রিয়াকলাপে তিনি সভাসদবর্গকে মুহূর্তে মোহিত ও আকর্ষিত করেন। কিন্তু পুরোনোপন্থী বৃদ্ধ রাজার তা পছন্দ হয় না। তিনি তাঁর বাল্যসখা বরজলালের আগমনি-বিজয়ার গান ভূপালি রাগে ও মূলতানি সুরে ‘গোকুলের গোয়াল গাথা’ শুনে অভ্যস্ত। তিনি পুনরায় সভায় বরজলালকে ডেকে আনেন। বৃদ্ধ বরজলাল শীর্ণহস্তে তানপুরা নিয়ে ‘ইমনকল্যাণ’ সুরে গান ধরলেও তিনি গান গাইতে পারেন না। ফলে শ্রোতাদের মন আকৃষ্ট করতে না পেরে তিনি প্রস্থান করেন। দীর্ঘদিনের অনভ্যাসে প্রাবন্ধিকও ফরাসি বলতে প্রায় ভুলে গিয়েছেন। কিন্তু ফরাসি মেমসাহেবের অনুরোধ, উৎসাহ ও জাত্যভিমানের তাগিদে শেষপর্যন্ত প্রাবন্ধিক সেই বরজলালের মতোই ফরাসি ভাষা বলতে শুরু করেছিলেন মেমসাহেবের কাছে।

মেমসাহেব প্রতাপ রায়ের মতো হওয়ার কারণ: ‘গানভঙ্গ’ কবিতায় দ্যাখা যায়, বৃদ্ধ রাজা প্রতাপ রায়ের, বাল্যবন্ধু বরজলাল ছাড়া আর কারও গান ভালো লাগে না। তাই বরজলালের গান শ্রুতিমধুর না হলেও তাঁর ইমনকল্যাণ সুর শুনে রাজা তাঁকে উৎসাহ দিয়ে বলেন, “আহাহা, বাহা বাহা কহিছে কানে, গলা ছাড়িয়া গান গাহ।” দীর্ঘদিনের অনভ্যাসে প্রাবন্ধিকও ফরাসি বলতে প্রায় ভুলে গিয়েছেন। কিন্তু ফরাসি মেমসাহেবের অনুরোধ, উৎসাহ ও জাত্যভিমানের তাগিদে শেষপর্যন্ত প্রাবন্ধিক সেই বরজলালের মতোই ফরাসি ভাষা বলতে শুরু করেছিলেন মেমসাহেবের কাছে। আলী সাহেবের ভাঙা ভাঙা ফরাসি ভাষা শুনেও মেমসাহেব যারপরনাই আনন্দিত হন। সুদূর প্রবাসে মাতৃভাষায় বাক্যালাপ করার আনন্দকে আলী সাহেব তুলনা করেছেন বরজলালের কণ্ঠে ইমনকল্যাণ সুর শুনে বৃদ্ধ রাজা প্রতাপ রায়ের আনন্দের সঙ্গে। মেমসাহেব প্রাবন্ধিকের সঙ্গে ফরাসি ভাষায় বাক্যালাপ করে খুবই আনন্দিত হয়েছিলেন।

আরো পড়ুন : একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment